Sunday 27 June 2021

আপনার নিস সাইটের ডোমেইনটি ঠিক আছে তো?

 


[আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। একটি সাধারণ ব্যাপার]
.
নিস সাইটের জন্য ডোমেইন সিলেকশনের ব্যাপারে আমি বেশ খুঁতখুঁতে। মনমতো ডোমেইন না পাওয়া পর্য়ন্ত খুঁজতেই থাকি। সেই মনমতো ব্যাপারটাও অনেক কিছুর উপর নির্ভর করে।
যেমন:-
  • ডোমেইনটা কি ড্রপড ডোমেইন?
  • পেনাল্টি খাওয়া ডোমেইন কিনা?
  • স্টপ ওয়ার্ড আছে কিনা?
  • স্প্যামি কিনা?
  • ওয়ার্ড দুইটার বেশি হয়ে গেলো নাতো?
  • ওয়ার্ড দুইটার সার্চ ভলিউম আছে কি?
  • কত ক্যারেক্টার হলো?
এরকম আরও বেশ কয়েকটি আছে। কিছু আছে যৌক্তিক। কিছু একদম লজিকহীন। যেমন ১৩ ক্যারেক্টারের ডোমেইন আমি চুজ করি না। এটা একদম লজিকহীন। ভুলে একবার একটা কেনা হয়ে গিয়েছিলো। আমি ঐ ডোমেইন নিয়ে কাজই করিনি।
কেন?
বললাম-ই তো যে লজিকহীন। 😛
এবার চলুন যেগুলোর পেছনে কারণ আছে সেই পয়েন্টগুলো নিয়ে জানা যাক। আপনার ডোমেইনের সাথেও পয়েন্টগুলো মিলিয়ে দেখতে পারেন। এক্সিসটিং প্রজেক্টে না মিললেও সামনের নতুন প্রজেক্টের জন্য কাজে লাগবে আশা করি।
ডোমেইনটা কি ড্রপড ডোমেইন?
আমি সাধারণত ড্রপড ডোমেইন নিয়ে কাজ করি না। ড্রপড ডোমেইন হলো ঐ ডোমেইনটা আগে একবার কেনা হয়েছিলো; পরে ক্রেতা রিনিউ করেননি আর। তাই ডোমেইনটা পার্কিং টাইম পেরিয়ে এখন আবার এভেইলেবল হয়ে গেছে রেজিস্ট্রেশন করার জন্য। নতুনভাবে তখন যে কেউ কিনতে পারেন।
এরকম ডোমেইন চুজ না করার কারণ হলো, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এরকম ডোমেইনগুলো স্প্যামি হয়ে থাকে। বিশেষ করে ভালোভাবে চেক করতে না পারলে কপালে শনির দশা মেলে। তাই সবচেয়ে ভালো হলো এরকম ডোমেইন এভয়েড করা। আমি তা-ই করি।
.
পেনাল্টি খাওয়া ডোমেইন কিনা?
এই ব্যাপারটা বুঝতে পারা খুবই কষ্টকর। একদম এক্সপার্ট লেভেলের না হলে সেটা খুঁজে বের করা অনেক কঠিন। এই ক্ষেত্রে সহজ তরিকা হলো ড্রপড ডোমেইন হলেই সেটাকে নিয়ে আর ঘাটাঘাটি না করে বাদ দিয়ে দেয়া। আর যদি সেটা বুঝতে চান, তাহলে হাসিবুল ভাইয়ের আর্টিক্যালটা দেখে নিতে পারেন। এছাড়াও ডোমেইন হিস্টোরি চেক করার একটা আর্টিক্যালও এই লেখার শেষে যোগ করবো। পড়ে নিতে পারেন। আমার নিজের একটা ভিডিও আছে। গ্রুপ রুলসের সাথে যায় না বলে সেটা এখানে দেয়া গেলো না 😉 ।
.
স্টপ ওয়ার্ড আছে কিনা?
এটা আমার জন্য এলার্জি। তবে অনেক এক্সপার্ট-ই এটা মানেন না। এমনকি এই গ্রুপের একজন সেরা এক্সপার্টের সাইটেও দেখেছি ডোমেইনে স্টপওয়ার্ড আছে। তবে তিনি সেটা এক্সপায়ার্ড ডোমেইন কিনেছেন। সেইজন্য হতে পারে।
এখন প্রশ্ন হলো- স্টপ ওয়ার্ড কোনগুলো? যেমন- The। ডোমেইনের উদাহরণ: TheWirecutter.com (বর্তমানে NYtimes)। এরকম আরও বেশ কিছু ওয়ার্ড আছে। যেমন: to, in, with, of, is, at, which, and, on.... এগুলোকে বলে স্টপ ওয়ার্ড। কোনো ইউআরএলে এরকম স্টপ ওয়ার্ড থাকলে গুগল বট সেরকম ইউআরএলকে ”অনেক সময়” রিড করতে পারে ন। যদিও এ ব্যাপারে ১০০% কোনো তথ্য কোথাও লিপিবদ্ধ নেই।
লিপিবদ্ধ নেই নির্দিষ্ট করে স্টপ ওয়ার্ডের লিস্টও। ফলে যেটা এক জায়গায় স্টপ ওয়ার্ড সেটাই অন্যত্র তা না-ও হতে পারে। তবে মজার ব্যাপার হলো- গুগলের চোখে best শব্দটাও কখনও কখনও স্টপ ওয়ার্ড (সোর্স: সাউটমীলাউড)।
সাম্প্রতিক সময়ে গুগল আর্টিক্যাল ইনডেক্স না করার পেছনে (এনএলপি সম্পর্কিত) এই স্টপ ওয়ার্ড সম্পর্কিত কিনা তা ভাববার বিষয়। টেকনিক্যাল এসইওতে এক্সপার্টরা এই বিষয়ে আরও ভালো বলতে পারবেন। সম্ভবত Aouwal ভাই এই ব্যাপারে সঠিক কোনো গাইডলাইন দিতে পারবেন।
.
স্প্যামি কিনা?
ডোমেইনের স্প্যাম স্কোর চেক করার নির্দিষ্ট কোনো মাপকাঠি গুগলের কাছে নেই। থার্ডপার্টি (যেমন ময) ইউজ করে এটা জানা যায়। স্প্যাম স্কোরটা আসলে নির্ধারণ হয় ডোমেইনটা কতবার ড্রপ হয়েছে এবং কতরকম ক্যাটগারিতে পুনর্জন্ম হয়েছে + ডোমেইনটার ব্যাকলিংক কোয়ালিটির উপর নির্ভর করে।
এই বিষয়টাও এক্সপার্ট ছাড়া নতুন মার্কেটারদের বুঝতে সমস্যা হওয়ার কথা। আমি নিজেও সমস্যা বোধ করি। যে কারণে ড্রপড ডোমেইন হলেই আর সামনে আগাই না। সেটাকে সেখানেই ছেড়ে দিয়ে অন্য দিকে মুভ করি।
.
ওয়ার্ড দুইটার বেশি হয়ে গেলো নাতো?
এটাও সুনির্দিষ্ট সঠিক কোনো কারণ না। আমি নিজে সাধারণত ডোমেইন দুই ওয়ার্ডের বেশিতে যাই না। দুই ওয়ার্ডের ডোমেইন শ্রুতিমধুর, সুন্দর, ব্রান্ডেবল এবং মনে রাখার মতো। জাস্ট এই কারণেই আমি দুই ওয়ার্ডের ডোমেইন পছন্দ করি। এছাড়া এসইও বা টেকনিক্যাল কোনো কারণ নেই। আমার নিজের আরেকটা কারণ হলো: ডোমেইনের নাম কোথাও লিখতে হলে কম পরিশ্রম করা লোগে 😁 ।
.
কত ক্যারেক্টার হলো?
আমার আরেকটা এলার্জি হচ্ছে ডোমেইনের ক্যারেক্টার নিয়ে। বিষয়টা প্রথম মাথায় আসে বেশ কয়েক বছর আগে। আপনি কি জানেন ট্যুইটার ইউজার নেম পনেরো ক্যারেক্টারের বেশি নেয় না? একবার ইউজার নেম সেট করতে গিয়ে এই সমস্যাটা পাই। তারপর থেকেই ডোমেইন কিনতে গেলে মাথায় এই ব্যাপারটা চলে আসে। চেষ্টা করি যতোটা সম্ভব শর্ট করতে। আমার বেশিরভাগ ডোমেইন ৯ এবং ১০ ক্যারেক্টারের। দুয়েকটা একটু এদিক-ওদিক আছে। তবে পনেরোর বেশি কোনোটা নয়।
.
ওয়ার্ড দুইটার সার্চ ভলিউম আছে কি?
ডোমেইন আমি দুই ওয়ার্ডের কিনি। আগেই বলেছি। তো ওয়ার্ড দুইটা চুজ হওয়ার পর প্রথমেই যে কাজটা করি সেটা হচ্ছে- সেটার সার্চ ভলিউম আছে কিনা তা দেখি। আমার কাছে এটা গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়। সার্চ ভলিউম আছে মানেই হচ্ছে কেউ না কেউ সার্চ করছে। আর সার্চ করার মানেই হলো ন্যুনতম একটা সুযোগ থাকে আমার ডোমেইনটার ইমপ্রেশন পাওয়ার; যদি তেমনভাবে ব্র্যান্ডিং করা যায়। আর ইমপ্রেশন পাওয়া মানেই তো... ❤ এটা আমার কাছে একটা বড় প্লাস পয়েন্ট মনে হয়।
তার মানে কিন্তু এই নয় যে, সার্চ ভলিউম ছাড়া আমি ডোমেইন কিনি না বা কাজ করি না। আছে, তেমন সাইটও আমার আছে। তবে কম। এবং ভবিষ্যতের প্রজেক্টগুলো যেন এসভি ছাড়া না হয় তা নিশ্চিত করছি।
.
ব্যতিক্রম উদাহরণ নয়
আমি জানি ব্যতিক্রম উদাহরণ নয়। কিন্তু মাঝে মাঝে ব্যতিক্রম কাজ করতে ইচ্ছে হয়। সাম্প্রতিক সময়ে এরকম একটা ব্যতিক্রম কাজ করেছি।
.
কি কি ব্যতিক্রম কাজ করলাম?
  • ডোমেইন একটা ৪ ওয়ার্ডের কিনেছি
  • সেটার ক্যারেক্টার ২৬টা, ইয়েস! ঠিকই দেখতে পাচ্ছেন 😃
  • সাইটে ১৭টা আর্টিকক্যাল দিয়েছি একই দিনে (এমনটা করি না)
  • এবং ভবিষ্যতে আর আর্টিক্যাল দেয়া হবে না (এমনটাও করি না)
  • ১২টা মানি এবং ৫টা ইনফো আর্টিক্যাল (রেশিও ঠিক রাখিনি)
  • টোটাল ওয়ার্ড ৪০ হাজার ওয়ার্ড প্লাস/মাইনাস (বর্তমান সময়ের জন খুব কম)
.
তবে সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো- এই লম্বা ৪ ওয়ার্ড বা ২৬ ক্যারেক্টার ডোমেইনের সার্চ ভলিউম ১২কে+। শুধু এই একটা প্লাস পয়েন্ট। এছাড়া আর কিছু আমার নিজস্ব মেট্রিক্সের সাথে মিলে না।
আর্টিক্যাল পাবলিশ করা হয়েছে আজ ১২ দিন। প্রথম ১০ দিনের GWMT এর অবস্থা হলো এই: https://prnt.sc/171rgvc
 (আগ্রহীরা দেখে আসতে পারেন।)।
এই সাইট নিয়ে ভবিষ্যত পরিকল্পনা কী?
সত্যি কথা বলতে সাইটটা বানিয়ে মজা পেয়েছি। কীওয়ার্ড রিসার্চ করা ছিলো আগের। ডোমেইন আর হোস্টিং কেনা হয়েছে এই মাসের প্রথম সপ্তাহে। তারপর টিম নিয়ে আর্টিক্যাল লেখানো এবং কনটেন্ট স্ট্রাকচার ডিজাইন করে পাবলিশ এবং অনপেজ কমপ্লিট করেছি ১৪ তারিখ। ঐদিনই গুগলে সাবমিট করা হয়েছে।
.
আপাতত সাইটটা ফেলে রাখা হবে। আর কোনো আর্টিক্যাল নয়। কোনো ব্যাকলিংক নয়। কোনোরকম আর কাজ নয়। ফেলে রাখা মানে ফেলে রাখা-ই। এটা একটা এক্সপেরিমেন্ট। শুধু মাঝে মাঝে সোশ্যাল নেটওয়ার্কে একটা করে ঢুঁ মারবো- তাও শুধুমাত্র পিনটারেস্টে। নিসটা পিনটারেস্টের উপযোগি। আর আর্টিক্যাল আপ-টু-ডেট রাখবো।
.
উপসংহার
আমার পছন্দের ডোমেইন সিলেকশন পদ্ধতি এবং ব্যতিক্রম উদাহরণ এইজন্য দিলাম যে, যেন আপনাদের এটা বুঝাতে পারি যে, কাউকে দেখে নয়, কারও কাজ শিখে নিজের মতো করে সেটা এপ্লাই করার চেষ্টা করা ভালো।
ভালো ভালো কথা শুনে কাজে নেমে পড়বেন না (ছবিতে বাবা-মা যতো আদর করে বলেছে তার আড়ালে কী আছে বুঝতে পারছেন তো? 😉 ), ভাই। কথাগুলো আগে বুঝতে যদি শিখতে পারেন, তবেই ভালো কিছু করা সম্ভব।
ফর মোর:
সবাই ভালো থাকুন।
হ্যাপি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং!

No comments:

Post a Comment